| পিনাকী ভট্টাচার্যের |
"গত আট মাসে সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশী অপহরণের শিকার হয়েছে শতাধিক। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে তিনজন। সবচেয়ে ভয়ংকর খবর হচ্ছে এই কাজ করছে বাংলাদেশীরাই। মুক্তিপণ আদায় একটা কারণ।
সেই ক্রিমিনালদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে সৌদি প্রবাসী সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ধনাঢ্য বাংলাদেশীরা।
আমি বিষয়টা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছি। আমাদের দুতাবাসেও কথা বলেছি। সরকার অবহিতই শুধু না উনারা কাজ করছেন।
কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। কিন্তু ভিক্টিমকে ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছে এমন প্রভাবশালী তারা। কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসছে না। তাই তারা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টা জটিল সেই কারণে। আপনারা সাক্ষ্য দিবেন। ভয় পাবেন না। আর এর পর থেকে যারা গ্রেফতার হবে তাদের নিয়ে এপিসোড বানাবো আমি ইলিয়াস আর কনক সারোয়ার একসাথেই। যারা এই ক্রিমিনালদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদের নাম ধাম প্রকাশ করে দেবো হাতে অকাট্য প্রমাণ এলেই।
আমরা কিছু নাম জেনেছি এর মধ্যেই যারা এই ক্রিমিনালদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। আর একটা ঘটনা ঘটলে সিরিয়াল ধরে একজন একজন করে নাম ধাম প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশের ভাত কিন্তু জিন্দেগীর মতো হারাম হয়ে যাবে।"
বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও প্রেক্ষাপট পিনাকীর এই পোস্টটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে শেয়ার করা হয়েছে, যা সৌদি আরবে বাংলাদেশী প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নিচে বিস্তারিত:
অপহরণের পরিসংখ্যান ও প্রকৃতি:
গত ৮ মাসে (এপ্রিল থেকে নভেম্বর ২০২৫) শতাধিক (১০০+) বাংলাদেশী অপহরণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
অপহরণকারীরা সহ-প্রবাসী বাংলাদেশীরা – তারা মুক্তিপণ (১০-৫০ লাখ টাকা) আদায় করে। অপহৃতদের আটকে রেখে বাংলাদেশে পরিবারের সঙ্গে ভিডিও/অডিও কল করে হুমকি দেয়া হয়। টাকা বিকাশ, ব্যাংক বা এমএফএস-এর মাধ্যমে আদায় করা হয়।
সৌদির রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মামের মতো শহরে এই চক্র সক্রিয়। ২০১৬-১৭ সাল থেকে শুরু হলেও, করোনা পরবর্তী সময়ে এটি 'মহামারী' আকার ধারণ করেছে।45de01
পিনাকীর অভিযোগ: সৌদির প্রতিষ্ঠিত ধনাঢ্য বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা এই ক্রিমিনাল চক্রকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এর ফলে গ্রেপ্তারকৃতরা ছাড়া পান। তিনি বলেছেন, কিছু নাম তারা জেনে গেছেন, এবং অকাট্য প্রমাণ পেলে প্রকাশ করবেন। "বাংলাদেশের ভাত জীবনের মতো হারাম হয়ে যাবে" – এই সতর্কবাণী দিয়ে তিনি জাতীয় লজ্জার কথা তুলে ধরেছেন।
পিনাকী জানান, তিনি সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কিন্তু প্রভাবশালীদের হুমকিতে ভিক্টিমরা সাক্ষ্য দিতে ভয় পান। ফলে অপরাধীরা মুক্তি পান।
সরকার অবহিত কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেই। দূতাবাসের 'প্রবাসী সহায়তা সেল' কাজ করছে না বলে অভিযোগ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও অফিসিয়াল বিবৃতি দেয়নি।b596a9
পিনাকীর ঘোষণা ও আহ্বান ভিক্টিমদের "সাক্ষ্য দিন, ভয় পাবেন না।"
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে ইলিয়াস এবং কনক সারোয়ারের সঙ্গে এপিসোড তৈরি করবেন। আরেকটি ঘটনা ঘটলে সিরিয়ালভাবে আশ্রয়দাতাদের নাম প্রকাশ করবেন।
এটি একটি জটিল সমস্যা, কারণ অদৃশ্য শক্তি (প্রভাবশালী লোকেরা) হস্তক্ষেপ করছে।
সাম্প্রতিক ঘটনার উদাহরণ (পিনাকীর পোস্টের প্রেক্ষাপটে):
নভেম্বর ২০২৫: রিয়াদে ২০ বছরের প্রবাসী মো. রাসেলকে অপহরণ। ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, পরিবার ৩৫ লাখ দেয়। চক্রের সদস্য জিয়াউর রহমান (৪২) বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হন।
মে ২০২৫: রিয়াদের সোলাই এলাকায় জয়নাল আবেদীনকে অপহরণ, ১০ লাখ দাবি। ১.৫ লাখ বিকাশে মুক্তি, কিন্তু নির্যাতিত।
সৌদিতে ৩৫ লক্ষ বাংলাদেশী শ্রমিক আছেন, যা রেমিট্যান্সের বড় অংশ। এই চক্র রেমিট্যান্স কমাতে পারে।
প্রভাব ও দাবি পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। #SaveSaudiBangladeshi, #StopKidnappingInSaudi ট্রেন্ড করছে। প্রবাসীরা ৭ দফা দাবি তুলেছেন: দূতাবাস সক্রিয় করা, যৌথ তদন্ত, ভিক্টিম সহায়তা ইত্যাদি। পিনাকীর এই পোস্ট বাংলাদেশী প্রবাসীদের নিরাপত্তার জন্য একটি নতুন আন্দোলনের সূচনা করেছে।
No comments:
Post a Comment