দেশে গত এক সপ্তাহে একাধিকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতের দিকে বঙ্গোপসাগরে চার মাত্রার ভূমিকম্প এবং বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ইন্দোনেশিয়ায় ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
যদিও বড় কোনো সুনামির খবর পাওয়া যায়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইন্দোনেশিয়া বা আন্দামান-নিকোবর অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প ঘটলে বাংলাদেশেও সুনামির ঝুঁকি থাকতে পারে।
ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা জানান, সাধারণত ছয় দশমিক পাঁচ মাত্রার উপরে সুনামির সম্ভাবনা দেখা দেয়। তবে বঙ্গোপসাগরে ছোট মাত্রার ভূমিকম্প সাধারণত বাংলাদেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয় না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ও সমুদ্রপৃষ্ঠ দুটি টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। তবে উপকূলের কাছে বড় ভূমিকম্প বা সুনামির ঝুঁকি এখন কম। অতীতের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালের ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি বাংলাদেশ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। এছাড়া ১৯৬২ সালে আরাকান কোস্টে সাড়ে আট মাত্রার ভূমিকম্প থেকেও সুনামির সৃষ্টি হয়েছিল।
ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানান, বড় ভূমিকম্পের পর ওই অঞ্চলে শক্তি সঞ্চয় হয়ে পরবর্তী বড় ভূমিকম্প হওয়া আরও ৫০০–৯০০ বছর সময় নেবে। ফলে বাংলাদেশের জন্য তৎক্ষণাৎ বড় সুনামির আশঙ্কা নেই।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে ‘ফানেল শেপ’-এ রয়েছে। তাই আন্দামান বা ভারত মহাসাগরে যদি বড় সুনামি তৈরি হয়, তার প্রভাব বাংলাদেশে আংশিকভাবে পড়বে, তবে ইন্দোনেশিয়ায় ঘটানো সুনামির মতো ভয়ঙ্কর হবে না।”
ফারজানা সুলতানা বলেন, ‘ভূমিকম্পের পরে সুনামি সম্পর্কে আগেভাগে সতর্ক করা সম্ভব। আমরা সবসময় টেস্ট বেসিসে প্রস্তুতি রাখি এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত সতর্কবার্তা জারি করা হয়।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশের জন্য সমুদ্রে সৃষ্ট ভূমিকম্পের চেয়ে ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেশি। এ কারণেই স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা ও প্রস্তুতি গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
No comments:
Post a Comment